আজ ০৯:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
[gtranslate]

বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু

  • রিপোর্টার
  • আপডেট টাইম : ০৭:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১০১ বার

বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত সাতক্ষীরা সদর থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ আলী মারা গেছেন। ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিটের প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। কনস্টেবল সোহাগ আলী চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ঝিনাইদহ বাসস্টান্ড পাড়ার অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিনের ছেলে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মাহাফুজ আলম জানানা, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাত পৌনে একটার দিকে দৌড়ে জরুরি বিভাগে আসে সোহাগ নামের এক কনস্টেবল। তখন তার জামা প্যান্টে পোড়ার গন্ধ বের হচ্ছিল। সারা শরীরে তার চামড়া উঠে গেছে। শিরাগুলো কালো হয়ে গেছে। নিজেকে সদর থানার কনস্টেবল পরিচয় দিয়ে বলে, তার বাংলাদেশ পুলিশের কং নং-৫১০। তবে কিভাবে তিনি বিদ্যুতায়িত হয়েছেন তা তিনি বলতে পারেননি। তার শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুঁটে আসেন। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ভর্তি না করিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিটে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। সোহাগকে ভর্তির সময় পুলিশ কেস হিসেবে এন্ট্রি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম জানান, সোহাগের শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তবে তার পরিহিত পোশাকেও আগুণ লেগে যায়। একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এ ধরণের পোড়া কোন সাধারণ আগুনে নয়। বিদ্যুতায়িত তার জামা কাপড়ে লাগলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, সোহাগ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে মধুমোল্লারডাঙিতে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার জন্য থানা থেকে বের হয়ে যায়। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাত একটার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করে জানানো হয় যে, সোহাগ বিদ্যুতায়িত হয়ে নিজেই হাসপাতালে চলে এসেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে সোহাগের শরীরে বিদ্যুতায়িত হয়ে ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানতে পারেন। তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিটের প্লাস্টিক সার্জারীতে ভর্তি করানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে সোহাগের বিদ্যুতায়িত হওয়ার ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুল ইসলাম সদর থানার পুলিশ কনস্টেবল সোহাগের মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনস এর পিছনে একটি গলি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুতের ছিড়ে পড়া তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে সে গুরুতর আহত হয়। তিনি আরও বলেন, তার শরীরের ৭০ ভাগ অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় মরদেহ সাতক্ষীরায় না এনে তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গায় নেয়া হচ্ছে। সাতক্ষীরা থেকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের বাড়িতে যাচ্ছেন।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু

আপডেট টাইম : ০৭:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত সাতক্ষীরা সদর থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ আলী মারা গেছেন। ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিটের প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। কনস্টেবল সোহাগ আলী চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ঝিনাইদহ বাসস্টান্ড পাড়ার অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিনের ছেলে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মাহাফুজ আলম জানানা, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাত পৌনে একটার দিকে দৌড়ে জরুরি বিভাগে আসে সোহাগ নামের এক কনস্টেবল। তখন তার জামা প্যান্টে পোড়ার গন্ধ বের হচ্ছিল। সারা শরীরে তার চামড়া উঠে গেছে। শিরাগুলো কালো হয়ে গেছে। নিজেকে সদর থানার কনস্টেবল পরিচয় দিয়ে বলে, তার বাংলাদেশ পুলিশের কং নং-৫১০। তবে কিভাবে তিনি বিদ্যুতায়িত হয়েছেন তা তিনি বলতে পারেননি। তার শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুঁটে আসেন। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ভর্তি না করিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিটে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। সোহাগকে ভর্তির সময় পুলিশ কেস হিসেবে এন্ট্রি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম জানান, সোহাগের শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তবে তার পরিহিত পোশাকেও আগুণ লেগে যায়। একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এ ধরণের পোড়া কোন সাধারণ আগুনে নয়। বিদ্যুতায়িত তার জামা কাপড়ে লাগলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, সোহাগ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে মধুমোল্লারডাঙিতে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার জন্য থানা থেকে বের হয়ে যায়। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাত একটার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করে জানানো হয় যে, সোহাগ বিদ্যুতায়িত হয়ে নিজেই হাসপাতালে চলে এসেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে সোহাগের শরীরে বিদ্যুতায়িত হয়ে ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানতে পারেন। তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিটের প্লাস্টিক সার্জারীতে ভর্তি করানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে সোহাগের বিদ্যুতায়িত হওয়ার ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুল ইসলাম সদর থানার পুলিশ কনস্টেবল সোহাগের মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনস এর পিছনে একটি গলি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুতের ছিড়ে পড়া তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে সে গুরুতর আহত হয়। তিনি আরও বলেন, তার শরীরের ৭০ ভাগ অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় মরদেহ সাতক্ষীরায় না এনে তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গায় নেয়া হচ্ছে। সাতক্ষীরা থেকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের বাড়িতে যাচ্ছেন।