ইব্রাহিম খান: সাতক্ষীরা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড—মধ্য কাটিয়া, গদায়বিল, মাঠপাড়া, ঝুটিতলা—বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা, কাদা আর চলাচলের দুর্ভোগে জর্জরিত হয়। দুর্ভোগটা নতুন নয়, বছরের পর বছর ধরে চলছে। সমস্যা কী? কাঁচা রাস্তা, বন্ধ ড্রেন, খালের দখল, অসম্পূর্ণ প্রকল্প আর শেষ না হওয়া প্রতিশ্রুতি। এসব মিলিয়ে এলাকাবাসীর জীবনে বর্ষা এখন আর্শীবাদ নয়, অভিশাপ। সাম্প্রতিক একটি ভিডিওতে গদায়বিলের ৪৫০ মিটার কাঁচা রাস্তার যে করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে, তা শুধু একটিমাত্র এলাকার সমস্যা নয়—বরং তা দেশের বহু নগর এলাকার একটি প্রতিনিধিত্বমূলক উদাহরণ। যেখানে রাস্তা নির্মাণ আর ড্রেনেজ ব্যবস্থার মতো মৌলিক নাগরিক সুবিধা আজও অধরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০২১ সালে নেওয়া বেতনা নদী পুনঃখনন প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ১০ মাসের কথা ছিল, ৪ বছরেও হয়নি। পৌরসভা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট রেখেছে বটে, কিন্তু কাজ শুরুর তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। এমন অজুহাত-নির্ভর পরিকল্পনা আর অদক্ষ বাস্তবায়নের বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
শুধু বরাদ্দ দিয়ে বা টেন্ডার ডেকে সমস্যা মিটে না। সমস্যা সমাধানে দরকার সমন্বিত উদ্যোগ, সময়সীমা, কঠোর তদারকি ও নাগরিক অংশগ্রহণ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিশেষজ্ঞ বলেছেন—রাস্তা আগে, ড্রেন পরে—এই ধারণা ভুল। বর্ষা আসার আগেই জরুরি ভিত্তিতে আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, ড্রেনেজ খনন এবং খাল-নালা পরিষ্কার করতে হবে। না হলে এই দুর্ভোগ শুধু স্থায়ী নয়, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণও হয়ে উঠবে।
এখন সময়—কথা নয়, কাজের। প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রকৌশলগত দক্ষতা আর প্রশাসনিক জবাবদিহিতা। নাগরিকদের জন্য সেবা দিতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দপ্তরগুলোকে মাঠে নামতেই হবে।
সাতক্ষীরার মধ্য কাটিয়ার দুর্ভোগ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—উন্নয়ন শুধু কাগজে থাকলে তা দুর্ভোগ বাড়ায়, মুক্তি দেয় না। এখনই সময় পরিকল্পনাকে বাস্তবে নামানোর। তা না হলে, আবারও কাদা-মাটির রাজ্যে আটকে থাকবে জনগণের প্রত্যাশা।
রিপোর্টার 















